![cover photo](https://i.gr-assets.com/images/S/compressed.photo.goodreads.com/books/1346479035l/15961145.jpg)
বই সম্পর্কিত কিছু সাধারণ তথ্য
- বইয়ের নাম : কোথাও কেউ নেই
- লেখক : হুমায়ুন আহমেদ
- প্রকাশকাল :ফেব্রুয়ারি,১৯৯২
- প্রকাশনা:কাকলী প্রকাশনী
- প্রচ্ছদ পরিকল্পনা : ইমপ্রেশষ্টি চিত্রশিল্পী (MONET) এর চিত্র অবলম্বনে
- মুদ্রিত মূল্য : ৩০০ টাকা
“কোথাও কেউ নেই”, গল্পে হিসেবে কিংবা নাটক হিসেবে বেশ পরিচিত ও সমাদৃত বাংলাদেশের মানুষের কাছে। বহুল কথিত ও বহুল আলোচিত এই উপন্যাসটি নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা যাক।
কাহিনীর সারসংক্ষেপ : “কোথাও কেউ নেই” উপন্যাসটিতে প্রচন্ড আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন এবং কঠোর একটি চরিত্র হলো “মুনা”। মাতা-পিতা হীন মুনা বড় হয়েছে তার মামা শওকত সাহেবের কাছে।মামা মামি ও ছোট দুই মামাতো ভাই বোন নিয়ে মুনার ছোট্ট পরিবার।
কাহিনীর আরেকটি মুখ্য চরিত্র হলো “বাকের ভাই”। বাকের ভাই অল্পতেই মাথা গরম করে ফেলে। এলাকার সবার কাছে মাস্তান হিসেবে সুপরিচিত সে। তবে পাড়ার লোকের যে কোনো অসুবিধায় বাকের ভাই ই সবার আগে এগিয়ে আসে। মুনার প্রতি বাকের ভাইয়ের কিছুটা দুর্বলতা লক্ষ্য করা যায়। মুনার অনিচ্ছাসত্ত্বেও, তাদের বাড়ির সকল সমস্যায় বাকের ভাই আগবাড়িয়ে সাহায্য করেন।
মুনার সাথে যোগসূত্রে “মামুন” নামে আরেকটি চরিত্রের সন্ধান পাওয়া যায়। যার সাথে মুনার দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে হওয়ার কথা থাকলেও,মামুনের স্বার্থপর কামনা এবং মুনার আত্মমর্যাদাবোধের সংঘর্ষে বিয়েটি ভেঙে যায়।
উপন্যাসটিতে মুনার জীবনে ঘটা ছোট-বড় অনেক প্রতিকূলতাকে তুলে ধরা হয়। মুনার কঠোরস্বভাব এবং কিছু ক্ষেত্রে বাকের ভাইয়ের সহযোগিতায়, মনোবল না ভেঙেই মুনাকে সকল পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে দেখা যায়।
স্বল্প সময়ের ব্যাবধানে মামি এবং মামার মৃত্যু, মামাতো বোন বকুলের বিয়ে,মামুনের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদ। হঠাৎ ঘটে যাওয়া কতগুলো ঘটনা মুনাকে একদম নিঃসঙ্গ করে তোলে।
এর মাঝে ঘটে আর একটি ঘটনা। রাজনৈতিক ক্ষমতাবান সিদ্দিক সাহেবের ভাড়াটে কর্তৃক পরিচালিত গোপনে পতিতাবৃত্তির ব্যবসা সম্পর্কে বাকের ভাই জানতে পারে। এর প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় বাকেরকে মিথ্যা খুনের মামলায় ফাঁসানো হয়। কাহিনীর এই অংশে মুনাকে বাকেরের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়। বাকেরকে কে মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচাতে সবরকম চেষ্টাই করতে থাকে মুনা।
কিন্তু কি হয় এর শেষ পরিণতি?
পাঠক প্রতিক্রিয়া: মুনাকে বরাবরই প্রচন্ড সাহসী ও শক্ত স্বভাবের মনে হয়েছে,যা প্রশংসার দাবিদার। বাকের চরিত্রকে মাস্তান হিসেবে দেখানো হলেও, সে যে মন থেকে নিতান্তই ভালো মানুষ তা স্পষ্টতই বুঝা যায়। উপন্যাসটি বহুল আলোচিত হওয়ায় এর পরিণতি অনেকের আগে থেকেই জানা। তবুও গভীরভাবে হৃদয় স্পর্শ করার মত ছিল।
কাহিনীতে বলা এ দুটি উক্তি ছাড়া মোটামুটি সবই ভালো লেগেছে। মধ্যবিত্ত পরিবারের সুখ দুঃখ গুলো অধিকাংশেই বাস্তবিক মনে হয়েছে। সমাজের বিত্তশালী ও ক্ষমতাবানদের সামনে আমাদের বাস্তবিক অবস্থা কেমন, তা কাহিনীর চাদরে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে বইটিকে অসম্ভব ভালোলাগার তালিকায় রাখার মতো।